ক্যান্সার এখনো বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী রোগ হলেও, প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত হলে চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। তাই শরীরে অজানা কোনো ব্যথা দেখা দিলে সেটিকে অবহেলা না করে সতর্ক হওয়া জরুরি, কারণ অনেক সময় এ ধরনের ব্যথাই হতে পারে ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের কোনো অংশে বিনা কারণে দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা থাকলে সেটি ক্যান্সারের সংকেত হতে পারে। ব্যথার ধরন ও অবস্থান দেখে কখনও বোঝা যায়, শরীরের কোন অংশে ক্যান্সার হতে পারে। সাধারণত ক্যান্সারের ব্যথাকে চার ধরনের হিসেবে চিহ্নিত করা হয়—
১. সোমাটিক ব্যথা:
সবচেয়ে সাধারণ এই ব্যথায় আক্রান্ত স্থানে মোচড় বা টান লাগার মতো অনুভূতি হয়।
২. নিউরোপ্যাথিক ব্যথা:
ক্যান্সার বা তার চিকিৎসা (যেমন কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, অস্ত্রোপচার) স্নায়ুর ক্ষতি করলে এই ব্যথা হয়। এতে আক্রান্ত স্থানে জ্বালাপোড়া বা পোড়ার মতো অনুভূতি দেখা দেয়।
৩. ভিসারাল ব্যথা:
বুক, পেট বা পেলভিসের মতো অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ব্যথা হলে তাকে ভিসারাল পেইন বলা হয়। এতে টান বা ধকধক করার মতো অনুভূতি হয়।
৪. তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা:
আঘাতজনিত ব্যথা সাধারণত কিছু সময় পর সেরে যায়। কিন্তু মাসের পর মাস ধরে চলা ব্যথা ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।
ক্যান্সারের ব্যথার লক্ষণ:
এই ব্যথা নিস্তেজ, তীক্ষ্ণ বা জ্বালাময়ী হতে পারে এবং তা প্রায়ই অবিরাম থাকে। মাঝারি থেকে তীব্র পর্যায় পর্যন্ত হতে পারে। যদি কোনো ব্যথা হঠাৎ শুরু হয়, ক্রমেই বাড়তে থাকে এবং সাধারণ ওষুধে উপশম না হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ক্যান্সারের আরও কিছু সাধারণ উপসর্গের মধ্যে অস্বাভাবিক বা চরম ক্লান্তি, হঠাৎ রক্তপাত, অকারণে ওজন হ্রাস, ত্বকের রঙ বা গঠনে পরিবর্তন, শরীরে নতুন কোনো গাঁট বা মাংসপিণ্ডের উদ্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসব উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণ নেওয়াই জীবন বাঁচানোর প্রথম পদক্ষেপ।
